


বঙ্কুমামার লিমেরিক
মোগলসরাই ইষ্টিশনে যেমনি গাড়ী থামে,
সামলে ধুতি লম্ফ দিয়ে বঙ্কু মামা নামে।
সামনে দেখে ইডলি ধোসা,
দেখতে না পায় কলার খোসা –
এর পরেতে কি যে হোল ভেবেই কপাল ঘামে।
আছড়ে পড়ে ঠ্যাংটি ভেঙে বঙ্কু মামা কাৎ,
কোথায় গেল হম্বিতম্বি লম্বা চওড়া বাত।
কাঁধে করে দুই মাতালে –
নিয়ে গেল হাসপাতালে,
কাঁধের থেকে ছিটকে পড়ে ভাঙল এবার দাঁত।
দাঁত ভেঙেছে কি হয়েছে? মাংস খাবে বলে,
রেস্তোরাঁতে বঙ্কুমামা ঢুকলো সদলবলে।
মামা শুধু মাংস খেলো,
মাতালরা ঝোল আলু পেলো –
মাংসের ঝোল বাড়িয়ে নিল মিশিয়ে নিয়ে জলে।
মাংস খেতে গিয়ে মামার দাঁতটি গেল পেটে,
ঝোল যা ছিল মাতাল দুটো সবই নিল চেটে।
মামার থেকে পয়সা নিয়ে,
দুইজনেতে দোকান গিয়ে –
আনল কিনে কিলোখানেক দুম্বাখাসীর মেটে।
ট্রেন ছাড়ল মোগলসরাই মামাকে বাদ দিয়ে,
মাতাল দুটো ফিরে এল নাপিত ধরে নিয়ে।
কোথায় মামা স্টেশন ফাঁকা,
মামা চড়ে মুটের ঝাঁকা –
দাঁত প্লাস্টার, ঠ্যাং বাঁধাল হাসপাতালে গিয়ে।











অফিসের বড়বাবু মাথা জোড়া টাক,
পেল্লাই গোঁফজোড়া তাই নিয়ে জাঁক।
এক টিন তেল নিয়ে,
সাহেবের ঘরে গিয়ে –
হাঁড়িমুখে ফিরে এসে বলে Bad Luck।
বলাইবাবুর মাথাখানা আস্ত পাকা বেল,
বিজ্ঞাপনে দেখতে পেলেন চুল গজানোর তেল।
বোতল বোতল কিনে এনে,
মাথায় মাখেন নিয়ম মেনে –
চুল না গজাক, দোকানদারের বাড়তে থাকে সেল।
গোবরডাঙায় বাস গুণধর সেন,
সাহেবকে তেল দিয়ে বাবু হয়েছেন।
তেলমাখা পা নিয়ে,
সাহেব চলতে গিয়ে –
শানেতে পিছলে পড়ে ঠ্যাং ভেঙেছেন।



এই তো সেদিন দিনদুপুরে শ্যামবাজারের মোড়ে,
কে বা কারা পেছন থেকে কলার চেপে ধরে –
বললে এবার পূজোর দিনে,
গাইতে হবে পয়সা বিনে,
ফিরতে হবে রাত বিরেতে দুই পা গাড়ী করে।










বঙ্কুমামার কল্প
“মাঝরাতে ঘুম ভেঙে দেখি” – বঙ্কুমামা বলে,
“পুকুরধারে রঙবেরঙের কিসের আলো জ্বলে?
লাট্টুমতন গাড়ির থেকে,
হেলমেটেতে মুখটি ঢেকে –
সবুজ মানুষ ভিন গ্রহিরা নামছে দলে দলে”।
মঙ্গলেতে গেল মামা মঙ্গলায়ন যানে,
বলছে কথা সেখান থেকে মোবাইল নিয়ে কানে –
“দেখছি কেবল চারদিকেতে,
ভুট্টা ফলে গমের খেতে –
কোথায় কি সব হচ্ছে কিছুই বুঝছি না তার মানে”।
বললাম আমি – “বঙ্কুমামা এ সব তোমার গল্প,
বলতে চাও তো বলতে পারো গুলগাপ্পি অল্প”।
শুনে মামা বিষম রেগে,
কানের কাছে কামান দেগে –
চেঁচিয়ে ওঠে – “মুখ্যু তোরা বুঝিস না’তো কল্প”।
পান্ত গোঁসাই
পাঠান মুলুক লালামুসায় পান্ত গোঁসাই থাকে,
কানের পিঠে চুরুট গুঁজে নস্যি নিয়ে নাকে –
হিঞ্চে শাক আর পলতা পাতা,
থানকুনি আর ব্যাঙের ছাতা –
অনলাইনে ব্যাবসা করেন চালান দিয়ে ডাকে।
পান্তো গোঁসাই শান্ত মানুষ, মাথায় কেবল গোল,
হিসেব যদি না মেলে তো মাথায় ঢালে ঘোল।
ঘন ঘন নস্যি নাকে,
কেবল হিসেব কষতে থাকে –
দুটো চ্যালা পাশে বসে বাজিয়ে চলে খোল।




মশার লিমেরিক
ভারী তো কামড়াবে ছোট এক মশা!
তারি তরে কেন বাপু এত আঁক কষা?
এক হাতে মশা ধরে,
রাখ আর হাত পরে –
দুই হাতে তালি মার, দেখো তার দশা।
মশা মারতে কামান দাগা হাসির কথা নয়।
গলগলিয়ে বেরোয় ধোঁয়া এমন গাড়ি হয়।
রাস্তা দিয়ে যখনই যায়,
ধোঁয়ার চোটে মানুষ পালায় –
মশা তখন মিচকি হেসে ঘরের ভেতর রয়।
রেঙ্গুনেতে হচ্ছে এখন ডেঙ্গু মশার চাষ,
বর্মিদেশের বিজ্ঞানীরা খাটছে বার মাস।
এর পরেতে ম্যালেরিয়া,
লাইনে আছে ফাইলেরিয়া –
থোড়াই কেয়ার – ডাক্তার আছে MBBS পাশ
ডাক্তারে মশাতে সখ্যতা আছে নাকি?
নিজেদের বোঝাপড়া? আমাদের দিয়ে ফাঁকি?
তাই বলি মশাগুলো,
দুই কানে দিয়ে তুলো –
করে এত মস্তানি, আমি ভয়ে চুপ থাকি।
জানালায় নেট দিয়ে আপাতত পেরুলে,
তারপরে কি হবে রাস্তায় বেরুলে?
মশাদের তোলাবাজি –
কি ছাই করবে কাজি?
মশারা যে পড়ে না সরকারি কোন রুলে।
চওড়া হাতে মারবে মশা তাই কি তোমায় সাজে?
হাত দুখানি যত্নে রাখ লাগবে নানান কাজে।
তূণে রাখ র্যাকেট ভরে,
মারবে পিঠে সপাং করে –
যেই না মশা বসবে এসে শিরদাঁড়াটার খাঁজে।
যন্ত্রবিদের জন্য আছে এক্কেবারে দিশি,
কাঠের দুটো পাটা আর সাথের তেলের শিশি।
মশা ধরে কাঠের পরে,
এক ফোঁটা তেল তার ওপরে -
মরবে মশা পিষলে পরে তেল যদি হয় তিসি।
এত ছড়া মশা নিয়ে মশারা কি জানে?
জানলে পরে গুনগুনিয়ে গাইবে এসে কানে।
মারলে চাপড় পড়বে গালে,
মরব নিজে নিজের চালে –
বুঝব ঠ্যালা কতটা চাল হয় কতটা ধানে।
মশা শুনে মনে পড়ে ঘনাদার গল্প,
লোকে বলে এটা নাকি বিজ্ঞান-কল্প।
মশা আর নিশিমারা,
এক চড়ে ভবছাড়া –
ঘনাদার কীর্ত্তি নয়তো আর অল্প!





নতুন গুড়ের পায়েস রাঁধে ক্ষ্যান্ত বুড়ির পিসি,
আঁচল খুলে কৌটো থেকে দিচ্ছে দাঁতে মিশি।
উঠোন পরে ধামা কুলো,
তাতে শুকোয় শিমুল তুলো –
মাঝে মাঝেই নাকে শোঁকে ক্যারাচিনির শিশি।









হরে কর কম লিমেরিক
(Gibbrish Limericks)
