top of page

অন্যান্য কবিতা (Other Poems)

saptak1.png
মধুসপ্তক.jpg

সপ্তক

sevendwarfs.jpg
little-fairy-holi1.jpg
কালক্ষয়.jpg
দুটিপাখি২.jpg
Old Man.jpg
Saptak2.jpg
ভূতসপ্তক১.jpg
kirtan5.jpg
সাঁঝবেলার গান.jpg

ফিবোন্যাসি কবিতা 

(Fibonnaci Poem)

গণিতের পূর্ণসংখ্যার একটি সাধারণ অথচ বিস্ময়কর ধারার নাম ফিবোন্যাসি ধারা।  এখানে প্রতিটি পূর্ণসংখ্যা তার নিকটতম পুর্ব্ববর্ত্তী দুটি পূর্ণসংখ্যার যোগফল।  ধারার শুরু ০ অথবা ১ দিয়ে।  উদাহরণ স্বরূপ – ০, ১, ১, ২, ৩, ৫, ৮, ১৩, ২১, ৩৪, ৫৫, ৮৯...।  প্রকৃতিতে আমাদের চারপাশে এই ফিবোন্যাসি ধারা ছড়িয়ে রয়েছে।  খরগোশ বা মৌমাছি বংশবিস্তার করে, বিভিন্ন বৃক্ষ শাখা-প্রশাখা বিস্তার করে এই ফিবোন্যাসি ধারা অনুসারে।  এছাড়াও সূর্যমুখী ফুলের পাপড়ির বিন্যাস, আনারসের খোসার বিন্যাস, পাইনকর্নের বিন্যাস, শামুকের খোলের গঠনের মধ্যে এই ধারার অনুসরণ দেখা যায়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলেস শহরের জনৈক চিত্রনাট্যকার ও কবি-সাহিত্যিক গ্রেগরী কে পিনকাস ২০০৬ সালের এপ্রিল মাসে তার ব্লগে ‘দি ফিব’ নামক একটি নিবন্ধে প্রথম কবিতা লেখার এক নতুন পদ্ধতির কথা উল্লেখ করেন।  তার এই নতুন কবিতা ছয় লাইনের – সর্ব্বমোট ২০ টি অক্ষর বা পদাংশ যুক্ত সম্পূর্ণরূপে ফিবোন্যাসি ধারা অনুসরণ করে।  এই ফিবোন্যাসি কবিতা নিয়ে বর্তমানে নানান পরীক্ষা চলছে। অক্ষর বা পদাংশ ছাড়াও শব্দ সংখ্যা নিয়েও এই কবিতা লেখা যেতে পারে।  এমন নয় যে কবিতা ছয় লাইনেই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে।  তবে লাইনের সংখ্যা বাড়লে তার সাথে সাথে অক্ষর বা পদাংশ বা শব্দ সংখ্যাও ফিবোন্যাসি ধারা অনুযায়ী বাড়তে থাকবে।  তাতে কবিতা লেখাও জটিল হবে আর মনে হয় কবিতার মাধুর্যেও ঘাটতি পড়তে পারে।  তার থেকে আট-দশ লাইন অবধি গিয়ে পরের লাইনগুলোতে অক্ষর বা পদাংশ বা শব্দ সংখ্যা এই ফিবোন্যাসি ধারা অনুসারে কমিয়ে নিয়ে আসা যেতে পারে।  তাতে কবিতার গঠন সৌন্দর্য্যও বৃদ্ধি পায়।  নিম্নলিখিত কবিতা তিনটির প্রথমটিতে অক্ষর সংখ্যা ও পরের দু'টিতে শব্দ সংখ্যা ফিবন্যাসি ধারা অনুসারে রাখা হয়েছে।

অনন্ত প্রশ্ন

 

কে?

কি?

কেন?

কোথায়?

কেমন করে?

কে এর জবাব দেবে?

আমি তো ভেবে পাই না এর উত্তর।

প্রশ্নগুলো আরও একটু সহজ করে বললে হয় না?

অর্থাৎ ঈশ্বর কে? চেতনার অর্থ কি? জন্ম কেন? মৃত্যুর পর আমাদের গতি কোথায় হবে?

চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র, নীহারিকা, নক্ষত্রনগরী, গাছপালা, পশুপাখী, কীট-পতঙ্গ, মানুষ সমেত এ  বিশ্ব- চরাচরের সৃষ্টি

হোল কেমন করে?

বিজ্ঞানী, দার্শনিক, জ্ঞানী, ভক্ত, নাস্তিক যে যার মতন করে উত্তর খোঁজার চেষ্টা করে যাচ্ছে –

কেউ বলেন ঈশ্বর নেই, কেউ ওপরে আঙ্গুল দেখায়,

কেউ বলেন ‘খোঁজো নিজ অন্তঃপুরে’।

আমি খুঁজেই চলেছি,

অনন্ত কাল।

আজও

পাই

নি।

তা’।

চিল

 

একা

চিল

নিদাঘের দুপুরে

বেড়ায় ঘুরে ঘুরে,

ডানা দুটো ভাসিয়ে দিয়ে আকাশে।

সুতীক্ষ্ণ স্বরের ডাক তার ভেসে যায় দূর বাতাসে।

ঘন ধুসর মেঘের মাঝে হারিয়ে কোথায় যে যায় সে, যায় না দেখা তাকে।

আবার কখনো বা ভেসে ওঠে মেঘের ফাঁকে ফাঁকে।

কখনো ক্লান্ত ডানায় নেমে আসে,

ডালে এসে বসে,

চুপটি করে,

নিঃসঙ্গ

একাকী।

পরিযায়ী

 

নীল

আকাশে –

উড়ে চলে,

বলাকারা দলে দলে -

সুদূর দেশে যেথায় ওদের বাসা।

পরিযায়ী পাখীরা যত সব করে নিত্য যাওয়া আসা।

অনন্ত কাল এ বিশ্ব চরাচরে, তেমনি আমি আসি যাই কোন অজানা উৎস হতে –

বিরামহীন ভেসে চলি ভেলার মতন জীবন মৃত্যুর স্রোতে।

কোথায় যাব আজও জানতে পারিনি।

শুধু এটুকু জানি,

যেতে হবে।

অজানার

উদ্দেশে।

Pi কবিতা Pi (π) Poem

 

Pi (π) একটি গাণিতিক ধ্রুবক। এর মান – ৩.১৪১৫৯২৬৫৩৫৮………। গত তিরিশ বছর ধরে সারা বিশ্বে প্রতি বছর ১৪ই মার্চ (মাস ৩ দিন ১৪) জাতীয় Pi দিবস রূপে এটা পালিত হয়ে আসছে। ২০১৫ সালের ১৪ই মার্চ অর্থাৎ ৩/১৪/১৫ ছিল সুপার Pi দিবস।।। ১৪ই মার্চ Pi দিবস উপলক্ষ্যে আবহমান কবিতাটি লেখা যার পর পর লাইনে শব্দ সংখ্যা Pi এর মান অনুযায়ী রাখা হয়েছে – প্রথম লাইনে তিনটে শব্দ আর এর পর অর্থাৎ দশমিকের পর এগারোটা সংখ্যা।

আবহমান

 

যা কিছু সান্ত,

অনন্ত

বিরাজ করে তার’ই ভিতরে,

বিশ্বচরাচরে।

যেমন সাগরে বরফের শিলা ভাসে,

তেমনি একই সত্ত্বা অগণ্য নামে রূপে ভাসে অনন্ত মহাকাশে।

দিবস রাত্রি,

কত কাল ধরে কত অসংখ্য যাত্রী –

এসে নামে এ ধরার খেয়াঘাটে।

সারাটা দিন কাটে,

জীবনের হাটে বৃথাই ঘুরে ফিরে –

সাঁঝবেলায় ফিরে চলে যায় শুন্য হাতে আপন কুটিরে।

Calla Lily1.JPG

 

Triplet (ত্রয়ী বা ত্রিতয়)

 

Tercet তিন লাইনের stanza (স্তবক)। অন্ত্যমিল ক ক ক, ক খ ক অথবা ক খ গ হতে পারে। কয়েকটা Tercet নিয়ে বড় কবিতা হয়। Triplet কিন্তু তিন লাইনেই বাঁধা - ছড়ার ছন্দটাই Triplet এর বৈশিষ্ট্য আর অন্ত্যমিল ক ক ক। তিন লাইনে বাঁধা কবিতা হাইকুও হয় তবে হাইকুর থেকে Triplet সম্পূর্ণ আলাদা।

 

পথের মাঝে দুই বুড়োতে হঠাৎ মারামারি,

ধাপুস ধুপুস এ ওর পিঠে মারছে ছাতার বাড়ি।

ফোকলা গদাই দেখবে বলে ছুটলো তাড়াতাড়ি।

 

বুড়ো দাদু বিষম খেয়ে খকর খকর কাশে,

তাই না দেখে ফোকলা মানিক ফিকফিকিয়ে হাসে –

ভয়ের চোটে বিড়ালছানা লুকোয় গিয়ে ঘাসে।

 

সাঁতরাগাছির সাঁতরা মশাই যাত্রা করে কাল,

শ্বশুর বাড়ি চাতরা গেলেন আনতে গাছের তাল।

গিন্নি খাবেন তালের বড়া ভরিয়ে দুটো গাল।

 

             

              দ্বিধা

 

কতটা বছর পেরিয়ে এলেম, কখনও তো বসে গুনিনি,

কত লোকে কত উপদেশ দিল, কারো কথা কভু শুনিনি।

সংসার জালে বাঁধা পড়ে গিয়ে স্বপনের জাল বুনিনি।

 

জনম জনম চলছি ভেসে খড়ের কুটোর মতন

তোমায় ভুলে খুঁজে বেড়াই হীরে মানিক রতন

তবু আমার চেতন না হয় দেখে নিজের পতন।

 

কেউ বা খোঁজে বাইরে তোমায় কেউ বা খোঁজে অন্তরে।

কেউ বা খোঁজে ধ্যানে তোমায়, কেউ বা জপের মন্তরে।

তোমার লাগি হয় বিবাগী, কতই সাধু সন্ত রে।

কেউ বা বলে তুমি নাকি শুধুই অলীক কল্পনা,

তবে কেন তোমায় নিয়ে করছে সবাই জল্পনা ?

কল্পনা কি - বাস্তবেরই রঙ মেশানো গল্প না?

 

তোমায় যারা ডাকে, তুমি তাদের কাছে আসছ কি?

তোমায় ভালবাসে যারা, তাদের ভালবাসছ কি?

তাদের মুখের পানে চেয়ে মধুর হাসি হাসছ কি?

 

বিশ্বজগত মাঝে তোমার প্রকাশ কেন বুঝছি না?

ধরার সকল প্রাণের মাঝে তোমায় কেন খুঁজছি না?

তোমায় পাবার জন্য কেন তেমন করে যুঝছি না?

 

পথের মাঝে পড়লে পরে আমায় তুমি ধরবে কি?

ভুলের পরে ভুল করেছি আমায় ক্ষমা করবে কি?

তোমার মনের মতন করে আমায় তুমি গড়বে কি?

Shiva2.jpg

তূনক ছন্দ

ভূতের কেত্তন

 

ভূতের মাসি, পোটলা ঠাসি, গয়া কাশী যান,

তার যে খুড়ো, হোৎকা বুড়ো, গায় বেসুরো গান।

মামদো ভূতে, রাত্রে শুতে, তাইহোকুতে যায়।

তার যে পিসে, কমটা কি’সে, কাঁচের ডিশে খায়।

ভূতের বাপে, ভয়ে কাঁপে, দেখলে সাপে রাতে,

পেতনি পিসি, দিবস নিশি, দিচ্ছে মিশি দাঁতে।

ভূতের ছানা, বলতে মানা, চীনের খানা রাঁধে।

তার যে কাকা, পকেট ফাঁকা, ঝোলায় টাকা কাঁধে।

ভূতের মায়ে, র‍্যাপার গায়ে, খড়ম পায়ে নাচে,

ভূতের ছেলে, মাছের তেলে, ফোঁড়ন ঢেলে হাঁচে।

আদুর গা’টা, স্কন্ধকাটা, ল্যাংড়া পা’টা নিয়ে,

পিঁপড়ে মারে, বনের ধারে, বাঁশের ঝাড়ে গিয়ে।

ভূতপুরাণ

 

সাত সকালে

ভূতরা খালে

ছাঁদন জালে

ধরছে মাছে।   

 

চোখটা ঘোলা

ঝড়ছে নোলা

মুনডু ঝোলা

ঝুলছে গাছে। 

ভূতের ছেলে

নোংরা কেলে

সদলবলে

খেলছে মাঠে। 

 

পেতনি মাসি

শ্যাওড়াবাসি

কাটছে খাসি

পুকুর ঘাটে। 

 

বেহ্ম ঠাকুর

নিবাস পাকুর

হস্তে কাঁকুর

খড়ম পায়ে। 

 

পৈতে গলায়

চণ্ডীতলায়

নাইছে জলায়

আদুর গায়ে। 

 

শাঁকচুনিতে

গান শুনিতে

ডানকুনিতে

সাঁঝের বেলা। 

 

তড়বড়িয়ে

চলল গিয়ে

সঙ্গে নিয়ে

ভাইপো প্যালা। 

 

শ্রীঘর খাটা

স্কন্ধকাটা

খ্যাংরা ঝাঁটা

দেখছে চেখে। 

 

গলির মোড়ে

গলায়-দড়ে

লুকিয়ে পড়ে

পুলিশ দেখে। 

 

পেঁচোয় দানো

মানো না মানো

খেলছে জানো

ক্রিকেট খেলা 

 

জিনের দেশে

জিনপরী সে

যাচ্ছে ভেসে

ভাসিয়ে ভেলা। 

 

বিদেশী ঘোস্ট

খাচ্ছে যে রোস্ট

পাউরুটি টোস্ট

দুধ আর কলা। 

 

ভূতরা ন ভাই

করতে জবাই

যাচ্ছে সবাই

ক্যাওড়াতলা। 

 

মামদোগুলো,

পিটছে কুলো,

ধুনছে তুলো

ঘরের ছাতে। 

 

ভুতের রাজা

ইলিশভাজা

খাচ্ছে তাজা

চাঁদনি রাতে। 

Flower Bouque21.JPG
bottom of page